বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও রপ্তানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে শ্রমবাজারের সংকোচন এবং রপ্তানিতে প্রায় ৩০ শতাংশ হ্রাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে, বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ এবং করণীয় নির্ধারণ করা জরুরি।
শ্রমবাজারের বর্তমান অবস্থা
জনশক্তি রপ্তানির পরিসংখ্যান
বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে ১০,১১,৮৬৯ জন কর্মী বিদেশে গিয়েছেন। এর মধ্যে ৯৫ শতাংশ কর্মী সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, কাতার, সিঙ্গাপুর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে কর্মরত।
প্রধান শ্রমবাজারের উপর নির্ভরতা
বাংলাদেশের শ্রমবাজার মূলত কয়েকটি দেশের উপর নির্ভরশীল। ১৫৮টি দেশে কর্মী পাঠানো হলেও, দক্ষ জনবলের অভাবে বাজার সীমাবদ্ধ ৭ থেকে ৮টি দেশে।
রপ্তানি হ্রাসের কারণসমূহ
দক্ষতার অভাব
দক্ষ কর্মীর অভাব বাংলাদেশের শ্রমবাজার সংকোচনের একটি প্রধান কারণ। স্বল্প দক্ষ শ্রমিক অভিবাসনের হার বৃদ্ধি পেয়েছে, যা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ার কারণ হতে পারে।
ভিসা অপব্যবহার ও অতিরিক্ত কর্মী পাঠানো
প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত কর্মী পাঠানো এবং ভিসা অপব্যবহার শ্রমবাজার সংকোচনের অন্যতম কারণ।
শ্রমবাজার সংকোচনের প্রভাব
অর্থনৈতিক প্রভাব
শ্রমবাজার সংকোচনের ফলে রেমিট্যান্স হ্রাস পেতে পারে, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
সামাজিক প্রভাব
বেকারত্ব বৃদ্ধি পেলে সামাজিক অস্থিরতা বাড়তে পারে, যা দেশের সামগ্রিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি।
সম্ভাব্য সমাধান ও করণীয়
দক্ষ কর্মী গড়ে তোলা
প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ কর্মী তৈরি করা জরুরি, যাতে তারা বৈশ্বিক শ্রমবাজারে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম হয়।
নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি বৃদ্ধি
ভিসা অপব্যবহার রোধে কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি প্রয়োজন, যাতে অতিরিক্ত কর্মী পাঠানো বন্ধ হয়।
নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধান
বর্তমান বাজারের উপর নির্ভরতা কমিয়ে নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধান ও সম্প্রসারণ করা উচিত।
বাংলাদেশের শ্রমবাজার সংকোচন ও রপ্তানি হ্রাস দেশের অর্থনীতি ও সমাজের জন্য চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে। সঠিক পরিকল্পনা ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে এই সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভব।